গ্রেটা থুনবার্গসহ আটকদের ওপর নির্যাতন, ইসরায়েলি পতাকায় চুমু দিতে বাধ্য করা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:১৫

গাজাগামী মানবিক সহায়তা জাহাজ আটক করার পর সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, এমন অভিযোগ করেছেন তুরস্কের মানবাধিকার কর্মীরা।
রোববার (৫ অক্টোবর) তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, আটক কর্মীদের মধ্যে ছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ।
তাকে চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে নেওয়া, হামাগুড়ি দিতে বাধ্য করা এবং জোর করে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
গ্রেটা থুনবার্গ গত জুনে ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজে করে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে রওনা হয়েছিলেন। গাজার কাছাকাছি পৌঁছানোর পরই ইসরায়েলি নৌবাহিনী জাহাজটি আটক করে। তিনি ফের ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অংশ হয়েছিলেন। সেখান থেকে আবারও ইসরায়েলের হাতে বন্দি হন।
তুরস্কের মানবাধিকার কর্মী এরসিন চেলিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সামনেই গ্রেটাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। সে তো সবে তরুণী। তাকে পতাকায় চুমু দিতে বাধ্য করা হয়েছে, ঠিক যেমন নাৎসিরা একসময় মানুষকে অপমান করত।
তিনি বলেন, গ্রেটাকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হয়েছে, কারণ সে একটি বিশ্বপরিচিত মুখ। তাকে প্রকাশ্যে ‘ট্রফির’ মতো প্রদর্শন করা হয়েছে।
মার্কিন নাগরিক উইন্ডফিল্ড বিবার অভিযোগ করেন, থুনবার্গকে ভয়াবহভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তার শরীরে ইসরায়েলি পতাকা জড়িয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে আমাদের ব্যবহার করা হয়েছে। ইতালির সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনো বলেন, মাত্র ২২ বছরের এক সাহসী নারীকে পতাকায় মুড়িয়ে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়েছে। এটি এক মানবিক লজ্জা।
মালয়েশীয় অধিকারকর্মী হাজওয়ানি হেলমি বলেন, আমাদের পশুর মতো ব্যবহার করা হয়েছে। খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ কিছুই দেওয়া হয়নি। টয়লেটের পানি খেতে হয়েছে। ভয়াবহ গরমে আমাদের ঝলসে দেওয়া হচ্ছিল।
অন্য এক কর্মী আয়সিন কানতোগ্লু জানান, আটক কেন্দ্রে তারা দেয়ালে রক্তের দাগ ও আগের বন্দিদের লেখা বার্তা দেখেছেন। দেয়ালে দেয়ালে সন্তান ও তাদের মায়ের নাম লেখা ছিল। আমরা ফিলিস্তিনিদের যন্ত্রণার সামান্য অংশ অনুভব করেছি।
ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা আদালাহ জানায়, আটক কর্মীদের হাত জিপ-টাই দিয়ে বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়, ওষুধ দেওয়া হয়নি এবং আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করা হয়। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের খাবার, পানি ও আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।