পুঁজিবাজারে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে: ডিএসই চেয়ারম্যান
বিজনেস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২
পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত হতে পারেনি। কারণ দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও অবহেলা পুঁজিবাজারকে সংকুচিত ও পঙ্গু করে রেখেছে। সেখান থেকে পুঁজিবাজারে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের সাথে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেড কোম্পানির (বিএপিএলসি) প্রেসিডেন্ট রূপালি হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নির্বাহী কমিটির সাথে নিকুঞ্জ ডিএসই টাওয়ারে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এই বৈঠকটি ঐতিহাসিক আখ্যায়িত করে বলেন, “প্রথমবারের মতো তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বৃহৎ সংগঠন বিএপিএলসি’র সাথে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।”
তিনি অভিনন্দন জানান সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রূপালি হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নির্বাহী কমিটির সব সদস্যকে।
এ সময় তিনি বলেন, “পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত হতে পারেনি। কারণ দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও অবহেলা পুঁজিবাজারকে সংকুচিত ও পঙ্গু করে রেখেছে। সেখান থেকে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদার) ড. আনিসুজ্জামানকে পুঁজিবাজার বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আমরা দেখেছি। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য বিএসইসিসহ সব পক্ষই আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এছাড়াও রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে টাস্কফোর্স কাজ করছে। আমরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ নিজেদেরকে ইতিবাচক পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আইপিও প্রক্রিয়া সহজ করার চেষ্টা করছি। এছাড়াও লিস্টিং পরবর্তী সময়ে কমপ্লায়েন্স নিয়ে অভিযোগগুলোর বিষয়ে ডিএসই আপনাদের হয়ে রেগুলেটরদের কাছে তুলে ধরছে।”
বিএপিএলসির চেয়ারম্যান রূপালি হক চৌধুরী বলেন, “তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি বাজারের স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে বিএপিএলসি সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডিএসই’র সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা দেশের পুঁজিবাজারকে আরো গতিশীল করবে। আমরা বিভিন্ন সময় বাজার উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ড. আনিসুজ্জামানসহ কমিশন ও সরকারি উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারকে অনেক বড় করতে হবে। আর বড় করার জন্য কি করতে হবে, এটি নিয়ে আমরা আরো আলোচনা করতে পারি। আমাদের সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা করার চেয়ে সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে বেশি আলোচনা করা জরুরি।”
তিনি আরো বলেন, “নতুন নতুন আইডিয়া ও বিজনেস প্ল্যান দেখে যদি ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে পারি তবে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।একই সাথে যারা তালিকাভুক্ত রয়েছে তাদের কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলো আরো সহজ করা প্রয়োজন। আজকের এই সভাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমরা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একসাথে সবাই কাজ করতে চাই।”
সভায় দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, আধুনিকায়ন এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিএপিএলসির প্রতিনিধি লিস্টিং প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা, কমপ্লায়েন্স ও সুশাসন কাঠামো, কর কাঠামো, আইপিও প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা এবং যথাযথ মূল্যায়ন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্যাটাগরি, যোগ্য ও মানসম্পন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তির জন্য গ্রীন চ্যানেল প্রবর্তন, রেগুলেটরদের মধ্যে সমন্বয় সাধন, নীতি নির্ধারক, নিয়ন্ত্রক ও কর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ, কোম্পানির মনিটরিং প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, নির্বিঘ্নে এজিএম আয়োজন, আইপিও’র ক্ষেত্রে ডাইনামিক ভ্যালুয়েশন মডেলের অভাব, ইউনিফাইড ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেমের অভাব, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ন্যূনতম করের পার্থক্য এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্র বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ডিএসইর পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সৈয়দ হাম্মাদুল করীম, মোহাম্মদ শাহজাহান, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি রোজারিও, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান।

logo-2-1757314069.png)
