জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক, ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আন্দোলনরত ইনকিলাব মঞ্চের সঙ্গে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টি এক বিবৃতিতে এ সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন সাহসী কণ্ঠ, ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি ন্যায়বিচার ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন, সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বরকে রাজপথে তুলে ধরার এক দৃঢ় প্রতীক।
এতে আরও বলা হয়, দুঃখজনক ও গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এই ঘটনার মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় যে অগ্রহণযোগ্য বিলম্ব ঘটছে, তা শুধু শহীদ শরীফ ওসমান হাদির পরিবার নয়-সমগ্র জাতির ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাকে আঘাত করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি স্বাধীন দেশে প্রকাশ্য সহিংস হত্যাকাণ্ডের পরও অপরাধীদের ধরতে না পারা এবং বিচার প্রক্রিয়ায় এমন দীর্ঘসূত্রতা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই আরও গভীর করছে। এর ফলেই জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও অনাস্থা বাড়ছে, যা রাষ্ট্র ও আইনের শাসনের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এতে বলা হয়, এই বিচার বিলম্ব, আসামি গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার প্রতিবাদে শহীদ শরীফ ওসমান হাদিরই প্রতিষ্ঠিত প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে শাহবাগে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে, তা ন্যায়বিচারপ্রত্যাশী জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ও যৌক্তিক প্রতিবাদ। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই ন্যায়সংগত আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন, সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ প্রতিবাদ ও আন্দোলনে উপস্থিত হন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল হকসহ আরও অনেকে। বিবৃতিতে এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি- শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার বিলম্ব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া জোরদার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এনসিপি মনে করে, এই বিচার কেবল একজন ব্যক্তির হত্যার বিচার নয়, এটি ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রের নৈতিক দায়বদ্ধতার পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আরও সংকুচিত হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া অবিলম্বে ত্বরান্বিত করুন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন এবং প্রমাণ করুন যে এই দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানুষরা বিচারহীনতার শিকার হয় না। ন্যায়বিচারের এই সংগ্রামে এনসিপি আজ, আগামী রোববার এবং ভবিষ্যতেও রাজপথে ও জনগণের পাশে থাকবে।

logo-2-1757314069.png)
