এনসিপির হাতে বিএনপির পতন হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭
বিএনপির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। লন্ডনে হওয়া ডিলে ক্ষমতায় গেলে এনসিপির হাতে বিএনপির পতন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রগঠনের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি: নভেম্বর, ১৯৭৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি যদি জোর-জবরদস্তি করে; মানে ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে তো একটা ডিল হয়েছিল। আবার বাংলাদেশে, নতুনভাবে আবার সেই ডিলটার চুক্তি নবায়ন করে তারা যদি ক্ষমতায়ও যায়। বাংলাদেশে এনসিপির হাতে তাদের পতন হবে। সুতরাং এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা হবে একটি দলের হাতে বা একই জনগণের হাতে যে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে তাদের হাতে বিএনপির পতন হবে। তখন কিন্তু একটি সুযোগ থাকে যে জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতা নেবে কিনা, এটা বড় একটা উদ্বেগের বিষয়।
বিএনপির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির ব্যাপারে একটাই কথা বলবো যে কিছু লোক আছে না নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ করে। বিএনপির হলো এই অবস্থা। নিজের ক্ষতি করে হলেও বাংলাদেশের জনগণের ক্ষতি করতে আসছে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, বিএনপির অবস্থা কি হবে? এটা তো বলছি যে, হ্যাঁ ভোটের মধ্য দিয়ে জন্ম, আর না ভোটের মধ্য দিয়ে তাদের মৃত্যু। তাদের মৃত্যুঘণ্টা অলরেডি বেজে গেছে। বিএনপি ১৯৯০ সালেও গাদ্দারি করেছে মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কত দুর্ভাগা। বাংলাদেশের মানুষ আবার রক্ত দিল, আবার জীবন দিল। ১৯৯০ তে রাজপথে গেল। তিন দলীয় একটি সোশ্যাল কন্টাক্ট হলো যে আমরা এটা করব। সেখানেও বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে গাদ্দারি করল।
এনসিপি নেতা বলেন, এখন ২০২৪ সালেও সুযোগ এসেছে। বিএনপিকে একবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ১৯৭৫ সালে, পারেনি। ৯০ সালেও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, পারেনি। ২০০১ সালেও সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, যে জিয়াউর রহমান চেয়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বনির্ভর করতে, দুর্নীতি রোধ করে বাংলাদেশকে একটি সঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে। জিয়াউর রহমানের মুখে কালো দাগ লাগিয়ে বিএনপি প্রথম এই বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযাত্রা শুরু করে। শেখ মুজিবের পাশে ছিল সব চোর, কম্বল চোর। আর এই খালেদা জিয়ার পাশে ছিল সব দুর্নীতিবাজ, সরকারি অফিসের টাকা চোর লোকেরা।
বিএনপি একদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে চায় মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমানকে বলা হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। কিন্তু বিএনপি যেটা করতে চাচ্ছে সেটা তো একদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে চাচ্ছে; বাংলাদেশে তারা গণতন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু এটা শুধু জিয়া ফ্যামিলির গণতন্ত্র। আমরা তেমন গণতন্ত্র বাংলাদেশে চাই না। আর এই একদলীয় গণতন্ত্রের বাইরে, ধানের বিরোধী যে পলিটিক্স করবে বা উনারা আসন বিক্রি করবে যে কিনতে না চাইবে তাকে শুট করা হবে। তো এই ধরনের পরিস্থিতি আসলে আমরা বাংলাদেশে চলতে দিতে পারি না এবং চাইও না। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এখন যখন সংস্কার বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আমরা সবাই ঐক্যে আসা শুরু করলাম তখন আবার উনারা মাঠে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি করা শুরু করল। জায়গায় জায়গায় হরতাল, জায়গায় জায়গায় হলো রোড ব্লক, বাড়ি ভাঙচুর করতেছে, এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম, গডফাদার গিরি এগুলোতো আমরা আগেই বলে আসছি, এগুলো যদি বন্ধ না করতে পারি বাংলাদেশে আসলে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমরা যেতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, তো আমাদের এখন পলিটিক্যাল ক্রাইসিসটা অনেক বড়। ইকোনমিক ক্রাইসিস যেমন রয়েছে, আর আমরা মনে করি যে বিএনপির যে ইকোনমিক পলিসি, এই পলিসি দিয়ে আসলে তারা ইকোনমিক থেকে যেই চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে সেখান থেকে বাংলাদেশকে উত্তোরণ করা সম্ভব না। তাদের পলিটিক্যাল জায়গা থেকেও উত্তোরণ করা সম্ভব না। আরপিও সংশোধনী অধ্যাদেশের প্রসঙ্গ টেনে এনসিপির এই নেতা বলেন, ইউনূস সরকার অথবা বর্তমানে যে সংস্কার কমিশন একটি ভালো কাজ করেছে; যে প্রতীক বিক্রির যে দোকান খুলেছিল বাংলাদেশের বড় দলগুলো, সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা এটা বলতে পারি যে প্রতীক বিক্রির দিন শেষ আবু সাঈদের বাংলাদেশ। আবু সাঈদের বাংলাদেশে আর কেউ প্রতীক বিক্রি করতে পারবে না। দুর্নীতির অভিযোগ আছে এমন কাউকে এনসিপি মনোনয়ন দেবে না জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা এই পর্যন্ত কোনো দুর্নীতির সঙ্গে, কোনো সন্ত্রাসের সঙ্গে যাইনি, আমরা চাঁদাবাজির সঙ্গে যাইনি। আগামী ইলেকশনে যার বিরুদ্ধে ন্যূনতম কোনো অভিযোগ আসবে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীর আমরা তাদেরকে নমিনেশন দেবো না।

logo-2-1757314069.png)
