Logo
×

রাজনীতি

‘ইসলামী ব্যাংক-ইবনে সিনার সঙ্গে জামায়াতের মালিকানার সম্পর্ক নেই’

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১:০৭

‘ইসলামী ব্যাংক-ইবনে সিনার সঙ্গে জামায়াতের মালিকানার সম্পর্ক নেই’

ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল বা ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো মালিকানার সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির দাবি আমাদের কাছে দুঃখজনক। ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনার মতো প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে। বিএনপিও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। চাইলে আমরাও অভিযোগ দিতে পারতাম, কিন্তু তা করিনি।

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, আমরা লিখিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করেছি। এখানে আমরা প্রস্তাব করেছি, জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট সম্পন্ন করতে হবে। জুলাই সনদে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, জাতিকে তা জানাতে হবে। মানুষ জানতে পারলে হ্যাঁ-না ভোট দেবে। যদি একই দিনে ভোট হয় ভোটার তো জানতে পারলো না। আমরা বলেছি, সংস্কার ও জাতীয় সনদের বিষয়গুলো ইলেকশন কমিশনকে পাবলিক করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তারা ওয়েবসাইটে দেবেন। জনগণ জানবে এবং সেটা নভেম্বরই হচ্ছে উপযুক্ত সময়। একই দিনে ভোট হলে নির্বাচন কেন্দ্রে সহিংসতা হতে পারে। দুই-চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হতে পারে। তো জাতীয় নির্বাচন প্রতীক প্রার্থীর দ্বন্দে ভোট বন্ধ হলে তাহলে গণভোটের দশাটা কি হবে? একই দিনেই তো ভোট হবে। একই কেন্দ্রেই তো হবে। ভোট কাস্টিং কমে যাবে। এই সমস্ত অনেক টেকনিক্যাল প্রবলেম আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবনা ও যুক্তিগুলো নির্বাচন কমিশন মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তারা কোনো নেতিবাচক মনোভাব দেখাননি। মনে হচ্ছে, আমাদের বক্তব্যে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমাদের যে গণপ্রতিত্ব আদেশ, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে যেটা সংশোধন হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটা বিধান হচ্ছে যেটা ইলেক্টোরাল প্রসেস। যে রিফর্ম কমিশন তারাও সুপারিশ করেছিল, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তার জন্য নির্ধারিত প্রতীকেই তিনি নির্বাচন করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের পলিটিক্যাল কালচারের কারণে জোটবদ্ধ রাজনীতির একটা কালচার রেওয়াজ আমাদের আছে সেটা করার ক্ষেত্রেও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বলেছে, জোট হতে পারে। কিন্তু প্রতীক হবে জোটবদ্ধ প্রত্যেক দলের স্ব স্ব দলের নির্ধারিত প্রতীকে তাদের ভোট করতে হবে। তার প্রতীক বাদ দিয়ে অন্য কোনো দলের প্রতীকে ভোট করা যাবে না। এটা লাস্ট ইলেকশন ইলেক্টোরাল প্রসেস রিফান্ড কমিশন তারা এই সুপারিশটা করেছে এবং উপদেষ্টা পরিষদে এই সংশোধনটা অনুমোদিত হয়েছে। এটা হওয়ার পরেও আমরা দেখলাম গত সম্ভবত ২৫ তারিখে একটি দলের পক্ষ থেকে এসে এটাকে আবার সংশোধন করার জন্য বলা হয়েছে। এটাকে আপত্তি জানানো হয়েছে। ইভেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘন করে খুবই দুঃখজনকভাবে একটা তথ্য উনারাই এখানে প্রকাশ করেছেন। উনারা বলেছেন, এই সংশোধনটা পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। আজকে চিফ কমিশনারকে বলেছি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ভঙ্গ হওয়ার এর চেয়ে নেকেড উদাহরণ আর কি হতে পারে। আমরা এটার ওপর ঘোর আপত্তি দিয়েছি, এটা কোনো ক্রমেই সংশোধন করা যাবে না। সংশোধিত যে বিধান আছে সে বিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে। তিনি আরও জানান, বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কমিশন কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ সব দল যেন সমান সুযোগ পায়, সে বিষয়েও তারা জোর দিয়েছেন।

এর আগে ইসির সঙ্গে বৈঠকে মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। দলে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. সেলিম উদ্দিন এবং দক্ষিণের সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল। এদিকে, ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ নিয়ে বিএনপির আপত্তির মধ্যেই ইসির সঙ্গে বৈঠক করল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি।