Logo
×

শিক্ষা

সংগ্রাম থেকে স্বপ্ন: চাকসু নির্বাচনে রিমনের পথচলা

Icon

ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২০

সংগ্রাম থেকে স্বপ্ন: চাকসু নির্বাচনে রিমনের পথচলা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী এস. এম. তারিকুল হক রিমন।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল থেকে নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তবে দলীয় ট্যাগের বাইরেও রিমন নিজেকে দেখেন একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে, যিনি স্বপ্ন দেখেন অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক চাকসুর।

শৈশবের অভিজ্ঞতা, রাজনীতির উত্তরাধিকার ঢাকার অলিগলি আর যানজটের ভেতরেই বেড়ে ওঠা রিমনের শৈশব কেটেছে সংগ্রামের মধ্যে। তার বাবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মিথ্যা মামলা ও হয়রানির শিকার হন বহুবার।

ছোটবেলায় বাবাকে পুলিশ কেন “সন্ত্রাসী” বলে অভিযুক্ত করে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই রাজনীতিকে কাছ থেকে চিনেছেন তিনি।“আমার মা’য়ের ত্যাগ, বাবার আদর্শ আর পরিবারের সংগ্রাম আমাকে শিখিয়েছে, প্রয়োজনে সর্বস্ব হারাতে হলেও ন্যায়ের পথে থাকতে হবে”—বলছিলেন রিমন।

‘অভ্যুত্থান থেকে নেতৃত্বের স্বপ্ন’ ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি অংশ নেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা তাকে আরও দৃঢ় করেছে। রিমনের ভাষায়, তার সংগ্রাম শুধু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নয়, বরং নিজের ভেতরে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার বিরুদ্ধেও। এখন তিনি চান নিজের সেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কাজে লাগাতে।

‘শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাসের অঙ্গীকার’ রিমনের মতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান একটি নিরাপদ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ক্যাম্পাস, যেখানে আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা সমান অধিকার ভোগ করবেন। পরিবহন, যাতায়াত ও আবাসন সমস্যার টেকসই সমাধান, জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন এবং ২৩০০ একরের ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশই তার অঙ্গীকার।

এ ছাড়া গান, নাচ, কবিতা থেকে শুরু করে ব্যান্ড সংগীত ও লোকগীতি—সব ধরনের সাংস্কৃতিক চর্চাকে সমর্থন দিয়ে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক সহাবস্থান গড়ে তুলতে চান তিনি।

‘ট্যাগ নয়, যোগ্যতার মাপকাঠি’ চাকসুকে দলীয় রাজনীতির বাইরে এনে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, নেতৃত্ব ও ত্যাগকে মূল্যায়ন করার দাবি তুলছেন রিমন। তার বিশ্বাস, শিক্ষার্থীরা এখন দলীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে আগ্রহী। “আমরা কেবল রাজনীতি করতে আসিনি, বরং প্রতিদিনের সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি”—বললেন তিনি।

‘ছাত্রদলের ভাবমূর্তির প্রসঙ্গ’ ছাত্রদল নিয়ে বিদ্যমান সমালোচনার কথাও এড়িয়ে যাননি রিমন। তবে তিনি মনে করেন, শিক্ষার্থীরা এখন নেতিবাচক ব্যারিয়ারের বাইরে এসে আবারও ছাত্রদলের সংগ্রামী ও সাহসী চরিত্রকে ফিরে পেতে চাইছে। আর সেই প্রত্যাশাই তার পথচলার শক্তি।

সবশেষ তিনি জানান, নিজের যন্ত্রণা থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণাই তাকে লড়াইয়ে নামিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি চাই না আর কোনো শিক্ষার্থীকে অন্যায়ের শিকার হতে হোক। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনেই আমরা গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, ভ্রাতৃত্বময় চাকসু গড়ে তুলব।”